আরোহ অনুমমানের আকারগত ভিত্তি কী কী? আলোচনা করো।
আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলতে এমন মৌলিক নিয়মকে বোঝায় যেগুলির উপর নির্ভর করে আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্ত স্থাপন করা হয়। আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি দুটি। যথা- প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্যকারণ নিয়ম।
প্রকৃতির একরূপতা নীতি: প্রকৃতি নিয়মের রাজত্বের অধীনে। প্রকৃতি রাজ্যে আকস্মিকভাবে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে না। প্রকৃতির সকল ঘটনাই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে ঘটে। প্রকৃতির একরূপতা নীতির মূলকথা হল-প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে। যে পরিস্থিতিতে প্রকৃতিতে কোনো ঘটনা একবার ঘটে, অনুরূপ পরিস্থিতিতে আবারও সেই ঘটনা একইরকমভাবে ঘটবে। যে অবস্থায় বা পরিস্থিতিতে কোথাও ভূমিকম্প হয়েছিল, সেই একই অবস্থা বা পরিস্থিতির যদি পুনরাবৃত্তি হয় তবে ভবিষ্যতেও ভূমিকম্প ঘটবে। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না-এটিই হল প্রকৃতির একৰূপতা নীতির মূল বৈশিষ্ট্য। এই নীতির উপর আস্থা রেখে আরোহ অনুমানের গঠন বা সামান্য আকার প্রতিষ্ঠিত হয় বলে প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।
কার্যকারণ নিয়ম: কার্যকারণ নিয়ম অনুসারে মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ আছে বলে মনে করা হয়। এর মধ্যে পূর্ববর্তী ঘটনাটিকে কারণ এবং পরবর্তী জগতের প্রত্যেকটি কার্যের একটি সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। বৈচিত্র্যময় জগতে শূন্য থেকে কোনো কিছুর সৃষ্টি হতে পারে না। প্রত্যেকটি ঘটনার কোনো-না-কোনো কারণ আছে। অভিজ্ঞতায় বারবার দুটি ঘটনাকে একসঙ্গে ঘটতে দেখে ওই দুটি ঘটনার ঘটনাটিকে কার্য বলে। যেমন-আগুন হল দহন ক্রিয়ার কারণ। এখানে আগুন হল কারণ এবং দহন ক্রিয়া হল কার্য। কার্যকারণ নিয়ম অনুসারে এক্ষেত্রে ‘আগুন’ এবং ‘দহন ক্রিয়া’-র মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ আছে বলে মনে করা হয়। এই কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতেই আরোহ অনুমানের সামান্যীকরণ করা হয় বলে কার্যকারণ নিয়মকে আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।