“স্মরণীয় উত্তরাধিকারে কোনো গ্লানি নেই ভেবে”- ‘স্মরণীয় উত্তরাধিকার শব্দবন্ধটি এই কবিতায় কেন এসেছে? ‘গ্লানি নেই’ বলারই বা কারণ কী

“স্মরণীয় উত্তরাধিকারে কোনো গ্লানি নেই ভেবে”- ‘স্মরণীয় উত্তরাধিকার শব্দবন্ধটি এই কবিতায় কেন এসেছে? ‘গ্লানি নেই’ বলারই বা কারণ কী? ২+৩

স্মরণীয় উত্তরাধিকার: স্মরণীয় শব্দটি দিয়ে যা কিছু মনে রাখার বা স্মরণ করার যোগ্য তা বোঝানো হয়। অন্যদিকে ‘উত্তরাধিকার’ হল উত্তরপুরুষ হিসেবে পূর্বপুরুষদের থেকে সম্পদ প্রাপ্তির অধিকার। এখানে কবি উক্ত শব্দবন্ধের দ্বারা বোঝাতে চেয়েছেন সভ্যতার প্রারম্ভ থেকে বর্তমান পর্যন্ত মানুষ তার জীবনের পথে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল- তাই-ই তার ‘স্মরণীয় উত্তরাধিকার’। কিন্তু এই উত্তরাধিকারে আজ থাবা বসিয়েছে মানুষের অমানবিক আচরণ যাকে কবি মানবসভ্যতার ‘গ্লানি’ বলে চিহ্নিত করেছেন।

মানি নেই বলার কারণ: এই কবিতায় ‘গ্লানি’ অর্থে মানুষের মনের মলিনতাকে ইঙ্গিত করেছেন কবি। গ্লানির বোধ একমাত্র সেই মানুষেরই হতে পারে যার চেতনা আছে, যে চিন্তা করে। নিজের কাজের গাফিলতি বা স্খলনকে চিহ্নিত করে যে সংশোধনে সচেষ্ট হয় সে-ই প্রকৃত বোধসম্পন্ন মানুষ। কিন্তু বর্তমানে মানুষ তার স্বার্থপর জীবনযাপনের পথে নিজের ত্রুটিকেই স্বীকার করতে চায় না, আত্মগ্লানিতে ভোগা তো দূরের কথা। মানুষের ‘স্মরণীয় উত্তরাধিকার’ যে কেবল হাসি-খেলার বিষয় নয়, তাতে মিশেছে মানুষের অন্তরের অন্ধকার, আর সেই নিয়ে মানুষের মনে কোনো গ্লানি নেই, নিজেকে সে নির্দ্বিধায় বিলাসিতার অন্ধকারে সঁপে দিয়েছে, তা উপলব্ধি করেই কবি সে বিষয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছেন।

Leave a Comment