“কোনো হ্রদে/কোথাও নদীর ঢেউয়ে/কোনো এক সমুদ্রের জলে …..- উদ্ধৃতাংশটি কোন্ কবির রচিত কোন্ কবিতার অন্তর্ভুক্ত? কবির বক্তব্য স্পষ্ট করো

“কোনো হ্রদে/কোথাও নদীর ঢেউয়ে/কোনো এক সমুদ্রের জলে …..- উদ্ধৃতাংশটি কোন্ কবির রচিত কোন্ কবিতার অন্তর্ভুক্ত? কবির বক্তব্য স্পষ্ট করো। ২+৩

কবিতা ও কবি: উদ্ধৃতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশ রচিত ‘তিমির-হননের গান’ কবিতার অংশ।

কবির বক্তব্য: কবিতার সূচনায় কবি জীবনানন্দ দাশ যেন সভ্যতার সূচনালগ্নে পৌঁছে গিয়েছেন, বন্দনা করেছেন সৃষ্টির আদিপিতা সূর্যকে। সমগ্র মানবসমাজের হয়ে প্রকৃতির কাছে ঋণ স্বীকার করেছেন কারণ সৃষ্টির শুরুতে সমস্ত প্রাণীসমাজ প্রকৃতির দ্বারাই লালিত ছিল। হ্রদ, নদী ও সমুদ্র-এই তিন বৃহৎ জলীয় আধারকে কবি যেন জীবনেরই গভীরতা-গতি-ব্যাপ্তির সঙ্গে মিলিয়ে দিতে চেয়েছেন। আবার একথাও আমাদের মনে রাখতে হবে জলেই প্রথম জীবনের সঞ্চার হয়েছিল, জলভাগ সরে গিয়েই স্থলভূমির সৃষ্টি, সভ্যতার বিবর্তনের ফলে এককোশী জীব থেকে বহুকোশী জীব হিসেবে- পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান প্রজাতি মানুষের উদ্ভব হয়। > তারা একে অপরের সঙ্গে জলের মতো সহজে মিশে গড়ে তুলেছিল শক্তিশালী, ঐক্যবদ্ধ মানবসমাজ। অনুভব করেছিল জীবনের অর্থকে, সৃষ্টির এই আলোড়নের দ্বারা মানুষ জীবনকে বুঝে নিতে, চিনে নিতে চেয়েছিল। কবি মানবসভ্যতার বর্তমান শোচনীয় অবস্থাকে অতিক্রম করার অভিপ্রায়ে সেই জীবনবিকাশের প্রারম্ভপর্বের কথাই স্মরণ করেছেন।

Leave a Comment