“পরস্পরের সাথে দু-দন্ড জলের মতো মিশে…”- ‘পরস্পরের সাথে বলতে কী বোঝানো হয়েছে? কবির মনোভাব নিজের ভাষায় লেখো

“পরস্পরের সাথে দু-দন্ড জলের মতো মিশে…”- ‘পরস্পরের সাথে বলতে কী বোঝানো হয়েছে? কবির মনোভাব নিজের ভাষায় লেখো। ২+৩

পরস্পরের সাথে-র অন্তর্নিহিত অর্থ: আমাদের মানবসভ্যতার যখন সূচনা হয়েছিল তখন মানুষের মন ছিল জলের মতো সরল। প্রকৃতির সকল প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে মানুষ জীবনকে উপলব্ধি করতে চেয়েছিল। জীবনের এই কঠিন পথে মানুষ বুঝেছিল একা সংগ্রাম করে টিকে থাকা সহজ নয়, বরং একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে সংঘবদ্ধ হয়ে এগোলে অনেক অসম্ভবও সম্ভব হতে পারে। এই কারণে তার মধ্যে দেখা গিয়েছিল একে অপরের সঙ্গে জলের মতো মিশে থাকার প্রবৃত্তি।

কবির মনোভাব: সভ্যতার ধারাবাহিক এগিয়ে চলার ইতিহাসে মানুষ ক্রমশ যাযাবর থেকে সভ্য, সুশিক্ষিত নাগরিক জীব হয়ে উঠেছে। তার মধ্যে যেমন এসেছে ক্ষমতার লোভ, লড়াই করে আত্মরক্ষা ও ক্ষমতা বিস্তারের প্রবণতা তেমনই সে হারিয়ে ফেলেছে ‘পরস্পরের সাথে’ মিশে একত্রিত হয়ে বাঁচার প্রেরণাকে। যে প্রেম, বন্ধুত্ব, সহমর্মিতার মতো মানবিক বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য মানুষ পৃথিবীর সবথেকে উৎকৃষ্ট জীব বলে বিবেচিত সেই গুণগুলিই মানুষের মন থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় যে মানুষ জলের মতো সহজে, সাবলীলভাবে একে অপরকে আপন করে নিয়েছিল বর্তমানে সে-ই হয়ে উঠেছে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর এক জীব যা নিয়ে কবি আক্ষেপ করেছেন।

Leave a Comment