“সেই এক ভোরবেলা শতাব্দীর সূর্যের নিকটে”- এখানে ভোরবেলা শব্দটি কোন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? শতাব্দীর সূর্যের নিকটে’ কারা, কী পেয়েছিল? ২+৩
ভোরবেলা: কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর ‘তিমিরহননের গান’ কবিতায় মানবসভ্যতার সূচনালগ্নের কথা বলতে গিয়ে ‘ভোরবেলা’-র প্রসঙ্গ এনেছেন, কারণ ভোের দিনের প্রারম্ভকালকে প্রকাশ করে। আর মানবসভ্যতার ভোরে অর্থাৎ বহু শতাব্দী আগে পৃথিবীতে যখন মানবজীবনের প্রথম আরম্ভহয়েছিল- তখন সেখানে মিথ্যাচার, স্বার্থপরতা, লোভ, হিংসার অন্ধকার ছিল না, ছিল প্রকৃতির অগাধ আলো। মানুষের জীবনের সেই সরল-সুন্দর প্রথম প্রভাতের কথাই কবি এখানে বলতে চেয়েছেন।
শতাব্দীর সূর্যের থেকে প্রাপ্তি: ভোরবেলা যেমন মানবজীবনের প্রথম পদক্ষেপের কথা মনে করায় তেমনই ‘শতাব্দীর সূর্য’ বললে আমাদের সেই শক্তিমান জ্যোতিপুঞ্জের কথা মনে পড়ে যায়, যা সমস্ত সৃষ্টির উৎস- কারণ আমরা প্রত্যেকেই সূর্যের জাতক। সূর্যের আলোই মানুষকে দিয়েছিল শক্তির দীক্ষা, উদারতা এবং সত্যের পথে এগিয়ে চলার সাহস। তাই তারা নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বা মিলেমিশে থাকার মাধ্যমে মানবসভ্যতাকে গড়ে তুলতে পেরেছিল। সুতরাং সূর্য যেমন প্রাণের উৎস তেমনই সূর্যালোকের শক্তিতেই আমাদের সভ্যতার জয়যাত্রা। অর্থাৎ পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব এবং জীবনকে বুঝে নেওয়ার যে রসদ, সেই সবকিছুই আমরা বহু শতাব্দী ধরে সূর্যের কাছ থেকেই পেয়ে আসছি। এই প্রাপ্তির কথাই কবি জীবনানন্দ দাশ উদ্ধৃত অংশে বলতে চেয়েছেন।